পিটিয়ে স্ত্রীর পা ভেঙে দিলেন স্বামী
ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের কুর্শিবাড়ি গ্রামে স্বামী নূরুল হক (৩০) প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে পিটিয়ে তার স্ত্রী রেশমা আক্তারের (২২) পা ভেঙে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। মারধরে আহত স্ত্রী বাদী হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় তার স্বামীসহ চারজনকে আসামি করে ধর্মপাশা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আহত রেশমাকে ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী, ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও আহত ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের কুর্শিবাড়ি গ্রামের নূরুল হকের সঙ্গে পার্শ¦বর্তী মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের টেপিরকোণা গ্রামের রেশমা আক্তারের দুই বছর আগে বিয়ে হয়। দা¤পত্যজীবনে রুশান নামে তাদের ৯ মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের তিনমাস যেতে না যেতেই মোবাইল কেনাসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে নূরুল হক তার স্ত্রী রেশমাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। রেশমা সাধ্যমতো বাবার বাড়ি থেকে মাঝে মধ্যে টাকা এনে দিতেন। দুই সপ্তাহ আগেও গ্যাসের চুলো কেনার জন্য ৫ হাজার টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেন রেশমা।
মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে ব্যবসা করার জন্য শ্বশুরের কাছ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা আনার জন্য চাপ দেন নূরুল। এতে অসম্মতি জানান স্ত্রী। এ সময় স্বামীর ছোট ভাই শাহ জাহান (২৫) তার বড় ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে এতে সমর্থন দেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হলে স্ত্রীকে তার স্বামী কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে নিজ বসতঘরের ভেতরে থাকা প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে স্ত্রীর বাম পায়ে আঘাত করেন স্বামী। এতে বাম পায়ের গোড়ালির অংশ ভেঙে যায়। পরে ৯ মাসের ছেলে রুশানকে নিজের কাছে রেখে দিয়ে স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেন স্বামী। প্রতিবেশী এক নারীর সহায়তায় ধর্মপাশা থানায় এসে ওইদিন সন্ধ্যায় এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেন রেশমা। অভিযোগ পেয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে কুর্শিবাড়ি গ্রামে যায় পুলিশ। এ সময় রেশমার শাশুড়ির কাছ থেকে ৯ মাসের ছেলে সন্তান রুশানকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ধর্মপাশা থানায় নিয়ে এসে শিশুটির মায়ের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনার পর থেকে রেশমার স্বামীসহ অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছে।
রেশমা আক্তারের মা মমিনা খাতুন (৪৫) বলেন, আমার মাইয়ার জামাইডা খুবই উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির। তার কথামতো টেহা না দিলেই সে আমার মাইয়ারে মারধর করে। এলাকার মাতব্বরাও ঘটনাটা জানে। আমরা এইডার সুবিচার চাই।
ধর্মপাশা থানার এসআই পঙ্কজ ঘোষ জানান, এ ঘটনায় আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ